
কক্সবাজার প্রতিনিধি ঃ
কক্সবাজারের মহেশখালীর পানিরছড়া এলাকার মরাঝিরিপাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে ‘বৈদ্য’ পরিচয়ে চিকিৎসা দেন মৃত রমিজ আহমেদের ছেলে কায়সার। স্কুলের বারান্দায় দাঁড়ানো অভিজ্ঞতাও নেই—তবুও আট বছর ধরে জিন তাড়ানো, জাদু–টোনা কাটানো, দাম্পত্য কলহ সমাধানসহ নানান ‘অদৃশ্য সমস্যার সমাধান’ করার দাবি করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। গত চার বছর ধরে এলাকায় গড়ে তুলেছেন স্থায়ী আসনও।
সরেজমিনে দেখা যায়—দূরদূরান্ত থেকে মানুষের ভিড়, প্রতিদিনই ২০০–২৫০ রোগী। নেই নির্দিষ্ট ফি; পরিস্থিতি দেখে যা বলা হয়, রোগীদের সেটাই দিতে হয়। অভিযোগ আছে—শুধু আসনে প্রবেশের জন্যই কখনো নেওয়া হয় ১০০১ টাকা। কারও সামর্থ্য বেশি হলেই দাবি বাড়ে।
কায়সারের অধীনে কাজ করেন পাঁচজন হেল্পার, যাদের কেউই শিক্ষিত নন। প্রতেকের বেতন মাসে প্রায় ২০ হাজার টাকা। আছেন একজন মাওলানা, যার দায়িত্ব তাবিজ লেখা। কায়সারের দাবি—প্রতিমাসে তার আয় দেড় লাখ টাকার কম নয়। তবে এসব লেনদেনের কোনো বৈধ নথি নেই; নেই প্রশাসনের কোনো অনুমোদনও।
‘আসনঘরে’ ঢুকতেই চোখে পড়ে অন্ধকারের মাঝে লাল আলো, সিনেমার মতো সাজসজ্জা—যা রোগীদের মানসিকভাবে প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। তাকজুড়ে রাখা তন্ত্রমন্ত্রের বই নাকি কায়সার নিজেই পড়তে পারেন না; রোগীদের সামনে জ্ঞানের ভান দেখানোই নাকি উদ্দেশ্য।
স্থানীয়দের অভিযোগ—চিকিৎসার নামে প্রকাশ্য প্রতারণা চলছে এখানে। অশিক্ষিত লোক দিয়ে চিকিৎসা, কুসংস্কারকে পুঁজি করে অর্থ আদায়—এতে মানুষ প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে। তবুও ভিড় কমছে না কুসংস্কারবিশ্বাসী মানুষের।
সচেতন মহলের দাবি—অনুমোদনবিহীন এ ধরনের আসন দ্রুত তদন্ত করে বন্ধ করা জরুরি। মানুষের সরলতা ও বিশ্বাসকে ব্যবসায় পরিণত করার সুযোগ যেন কেউ না পায়, সেজন্য প্রশাসনের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।