মোঃ আমিনুর ইসলাম, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ
অবৈধ বালু উত্তোলন প্রতিরোধে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হলেও একের পর এক অভিযান পরিচালনা করা মোটেও সহজ কোনো কাজ নয়। এ ধরনের অভিযানে প্রয়োজন হয় যথেষ্ট শক্তি, সময়, জনবল এবং অনুকূল পরিবেশ। শুধু অভিযোগ জানালেই চলবে না—নিজস্ব ভূমি ও প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হলে প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা এবং সক্রিয় প্রতিবাদ বল্লেন ইউএনও নাসিতা-তুল ইসলাম।
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসিতা-তুল ইসলাম দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে এসব ভূমি খেকুদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, আনসার, ঘিওর থানার পুলিশ, স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা এ অভিযানে অংশ নেন।
সর্বশেষ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং অভিযান পরিচালিত হয় ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের দুর্গম শোলধারার বিলে। এলাকাটি এতটাই নির্জন ও দুর্গম যে সেখানে পৌঁছাতে ছোট ডিঙ্গি নৌকা ছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিল না। ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনিক টিম বিলে প্রবেশ করে তল্লাশি চালায়।
অভিযানে চারটি শ্যালো ইঞ্জিন ও সারি সারি অবৈধ পাইপলাইনের সন্ধান মেলে, যা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন ও বিক্রয় চালানো হচ্ছিল বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। সঙ্গে সঙ্গে সবগুলো সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
ইউএনও নাসিতা-তুল ইসলাম বলেন, “অবৈধ বালু উত্তোলন কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। যারা এ কাজে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত অজ্ঞাত আসামির নামে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে শোলধারার বিল এলাকায় প্রভাবশালী চক্র বালু উত্তোলন করে বিপুল অর্থ উপার্জন করছিল। এতে একদিকে কৃষিজমি হুমকির মুখে পড়ছে, অন্যদিকে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। অভিযানে তাদের স্বস্তি ফিরে এসেছে।
এ ধরনের সাহসী অভিযানকে অনেকেই প্রশংসা করেছেন। সামাজিক সচেতনতা ও প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমেই কেবল অবৈধ বালু বাণিজ্য রোধ করা সম্ভব হবে বলে মত দিয়েছেন সচেতন মহল।