বরিশাল প্রতিনিধি ॥
শখের বসে বাড়ির পাশে ইন্ডিয়ান শাহী এবং কাশ্মিরি পেঁপের ১০-১২টি গাছ লাগিয়েছিলেন অধ্যাপক মোস্তফা কামাল। তিন বছরের ব্যবধানে সেই গাছের সংখ্যা হাজারটি ছুয়েছে,প্রতিটি গাছেই ঝুলছে পেঁপে, চলতি মৌসুমেই ৫০০টি গাছের কাঁচা এবং পাকা পেঁপে বিক্রি করে ১০ লাখ টাকা আয়ের আশা করছেন এই শিক্ষক।
বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা মোস্তফা কামাল। বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে অধ্যাপনা করেন তিনি। শিক্ষকতার পাশাপাশি অবসরে সময় দেন বাড়ির পাশে মাছের ঘের, সবজি এবং পেঁপে বাগানে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ আর সঠিক পরিচর্যায় তিনি এক একর জমিতে গড়ে তুলেছেন দুটি পেঁপে বাগান। যেখান থেকে শুধু বিক্রিই নয়, বরং নিজের পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজনদের পাশাপাশি চাহিদা মিটছে প্রতিবেশীদেরও। তার বাগানে উৎপাদিত চারার চাহিদাও বাড়ছে দিন দিন।
অধ্যাপক মোস্তফা কামাল জানান, শিক্ষাকতার পাশাপাশি অবসরে পেঁপে চাষ করে লাভবান হয়েছেন তিনি। এবার তার সবগুলো গাছেই ভালো ফলন হয়েছে। তবে বৃষ্টি কম হলে ফলন আরও ভালো হতো। তার পরও পেঁপে বাগানে লোকসান নেই। যে ফলন হয়েছে তা বিক্রি করে ১০ লাখ টাকা আয়ের আশা করছেন তিনি।
তিনি বলেন, পেঁপের পাশাপাশি বাড়ির ছাদে চারাও উৎপাদন এবং বিক্রি করছি। এ বছর পেঁপে চারার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান হতে চারার অর্ডার আসতে শুরু করেছে। এর পাশাপাশি ঘরে মাছ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ কররছি।
অধ্যাপক মোস্তাফা কামাল আরও বলেন, উঁচু জমিতে পেঁপে চাষ একটি লাভজনক ফসল। বেকার বসে না থেকে অবসরে সকলের এটা করা উচিত। আমার পরামর্শ নিয়ে এলাকায় বেশ কিছু যুবক ভালো পেঁপে বাগান করেছে। শুধু মাত্র চাঁদপাশা ইউনিয়নেই এবার ৫০ লক্ষাধিক টাকার পেঁপে উৎপাদন হয়েছে।
মোস্তফা কামাল বলেন, যারা পেঁপে বাগান করতে আগ্রহী আমি তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। কোনো পারিশ্রমিক ছাড়াই পরামর্শ এবং সহযোগিতা করছি। অনেকেই আমার বাড়িতে থেকে পেঁপে চাষ সম্পর্কে ধারনা নিয়ে সফল হয়েছে।
জানাযায়, একটি পেঁপে গাছ থেকে ৩ থেকে ৫ মন পর্যন্ত পেঁপে বিক্রি করা সম্ভব। ফলন এবং বাজারে বিক্রির উপযোগী করে তোলা পর্যন্ত একটি গাছের পেছনে খরচ মাত্র ৩-৪ শত টাকা। একটু পরিচর্যা করলে একটি পেঁপে গাছ থেকে ৫-৮ হাজার টাকা পর্যন্ত ফল বিক্রি করা সম্ভব।
বরিশাল জেলা কৃষি অফিসের উপ-পরিচালক মোসাম্মৎ মরিয়ম বলেন, সবজি ও ফল হিসেবে বাজারে পেঁপের অনেক চাহিদা। এ কারণে অনেকেই উদ্যোক্তা হিসেবে পেঁপে চাষের দিকে ঝুকছে। তাদের মধ্যে একজন অধ্যাপক মোস্তফা কামাল। তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি বিদেশী জাতের পেঁপে বাগান করে সফল হয়েছে। আমরা চাই যাঁরা শিক্ষিত যুবক আছেন তারা উদ্যোক্তা কৃষক হয়ে স্বপ্ন পূরণের পাথে এগিয়ে যাবেন। এ ক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ থেকে তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।