কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জকে সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদাবাজির হাত থেকে রক্ষা করতে ‘সন্ত্রাসী’ জরিপ মিয়া (৪৮) ওরফে কালা জরিপের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ।
আজ (১৮ সেপ্টেম্বের ) বৃহস্পতিবার দুপুরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া জমিদারবাড়ি এলাকায় ইউপি সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে সন্ত্রাসী জরিপ মিয়ার উত্থান ও অপরাধের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, কালা জরিপ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ইউনিয়নের হাসনাবাদ ইকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা একজন ভ্যানচালক ছিলেন। দুই দশক আগের কুখ্যাত ”আনসার বাহিনীর” সদস্য ছিলেন জরিপ মিয়া। পরবর্তীতে ওই বাহিনীর প্রধান আনসার পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলে বাহিনীর নেতৃত্বে আসেন কালা জরিপ। এরপর থেকে জরিপ বেপরোয়া হয়ে উঠেন। সে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হত্যা, ধর্ষণ, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, জমি দখল, মানবপাচার ও ডাকাতির মতো ভয়ঙ্কর অপরাধের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। বর্তমানে তার নামে বেনামে বিপুল সম্পদ রয়েছে। জরিপ মিয়ার বিরুদ্ধে অন্তত দেড় ডজন মামলা রয়েছে। তার বাহিনী বর্তমানে দেড় শতাধিক সদস্য নিয়ে সক্রিয়। যার মধ্যে কিশোর গ্যাংও রয়েছে। ২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি এই সন্ত্রাসী ও মাদক সম্রাট কালা জরিপকে তার তিন সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করে র্যাব-১০। ওই সময় তার কাছ থেকে বিদেশী পিস্তল, মাদক ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছিল। গ্রেপ্তার হলেও জামিনে বের হয়ে আবারও জরিপ অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।
ওয়াহিদুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, আমি ২০০২ সাল থেকে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। দায়িত্ব পালনের কারণে এলাকার বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে আমি সবসময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এজন্য জরিপ আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়। এই প্রেক্ষিতে সে বারবার আমার জমি দখলের চেষ্টা করেছে, চাঁদা দাবি করেছে, এমনকি প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। সম্প্রতি আমার মেয়ের নামে জমি দখলের চেষ্টা করে জরিপ বাহিনী। আমরা বাধা দিতে গেলে আমাকে ও আমার পরিবারকে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আমি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই কালা জরিপের কাছে জিম্মি। মানুষ ভয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না। তাই আজ আমি এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি, সন্ত্রাসী কালা জরিপ ও তার বাহিনীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে এলাকাবাসীকে সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদাবাজির হাত থেকে মুক্তি দিন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে জরিপ মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহাম্মদ আখতার হোসেন বলেন, ইউপি সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান ও জরিপ দুজনেই থানায় একে অপরের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তাদের জিডি তদন্ত করার জন্যে আদালতের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। জরিপের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওসি বলেন, আমার জানামতে তার বিরুদ্ধে বর্তমানে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নেই।