সাদুল্লাপুর প্রতিনিধি ঃ
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. মইনুল হাসান সাদিকের অপসারণ দাবিতে সাদুল্লাপুরে বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। এসময় জেলা নেতা সাদিক, উপজেলা নেতা শামছুল ও ছালাম সমর্থিত নেতাকর্মীরা লাঠি নিয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে সাদুল্লাপুর পৌর শহরে এ ঘটনা ঘটে। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় কয়েকটি মোটরসাইকেল ও উপজেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। আহত হয় এক পুলিশ সদস্য, এক সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন।
ডা. সাদিকের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভকারীরা জানান, সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নে বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি কাউন্সিল ছাড়াই আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দোসরদের পুনর্বাসন করে পকেট কমিটি গঠনের চেষ্টা চলছে। এরই প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশ করা হয়। তখন ডা. মইনুল হাসান সাদিক, উপজেলা নেতা ছামছুল হাসান ও ছালাম মিয়ার সমর্থিত নেতাকর্মীরা শাহিন আল পারভেজের নেতৃত্বে লাঠি নিয়ে বিক্ষোভকারীদের ও সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায়।
এতে উভয় পক্ষের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ছামছুল-ছালাম সমর্থিতদের হামলায় পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিক শাকিল মিয়াসহ উভয় গ্রুপের একাধিক ব্যক্তি আহত হন। পরে উত্তেজিত নেতাকর্মীরা উপজেলা বিএনপির কার্যালয় ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এ সময় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ছামছুল হাসান ছামছুল ও সদস্য সচিব আব্দুস ছালাম মিয়া অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মাঠে নামে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাদুল্লাপুর শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন আল পারভেজ বলেন, ‘হঠাৎ করেই আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি ও পোস্টার ছিঁড়ে চেয়ার ভাঙচুর করে। এসময় অফিসের সামনে থাকা ৪-৫টি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়।’
অন্যদিকে সাদুল্লাপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ছামছুল হাসান ছামছুল বলেন, ‘জেলা সভাপতি ডা. সাদিকের বিরুদ্ধে মিছিল করেছে বিএনপির একাংশ। পরে তারা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে অফিস ও মোটরসাইকেল। মূলত আওয়ামী পন্থি ও জামায়াতের লোকজন নিয়ে এ হামলা করা হয়েছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আলম মিয়া বলেন, ‘জেলা সভাপতি ডা. সাদিকের অপসারণ দাবিতে শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিলাম। কিন্তু সাদিকপন্থীরা হামলা করলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে আমাদের পক্ষের ৫-৭ জন আহত হয়েছে।’
সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার বলেন, ‘ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।