ঝালকাঠি প্রতিনিধি ঃ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় শিক্ষার্থীদের সাথে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে ছিলেন অটো চালক বেল্লাল। যে অপরাধে দৃষ্টিহীন বেল্লালকে ছেড়ে চলে যান তার স্ত্রী, বর্তমানে সে ১০ মাসের শিশু সন্তান আর বৃদ্ধা মাকে নিয়ে অসহায় দিন কাটছে দৃষ্টিহীন বেল্লালের।
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের কয়া এলাকার মৃত তৈয়ব আলী হাওলাদারের ছেলে বেল্লাল হাওলাদার।
২০২৪ এর ১৮ জুলাই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সাথে যোগ দিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের ছোড়া গুলিবিদ্ধ হয় বেল্লালের চোখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান।
তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় ঢাকা জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে। সেখানে তার চিকিৎসা শুরু হয় ৫ আগস্টের পর থেকে। এ কারণেই একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি হারাতে হয় বেল্লালকে।
বাবার মৃত্যুর পর অটো চালিয়ে যা রোজগার হয় তা দিয়ে মা ও স্ত্রীসহ তিনজনের সংসার ভালোই যাচ্ছিল বেল্লালের। এখন চোখ হারিয়ে একেবারেই বেকার তিনি। তার ওপর দৃষ্টিহীন হওয়ায় ছেড়ে গেলেন স্ত্রী। বেল্লালের এখন উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন বলে জানালেন প্রতিবেশিরা।
শিক্ষার্থীদের অন্যায়ভাবে মারধরের চিত্র সহ্য করতে না পেরে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন বেল্লাল। অথচ আন্দোলনে গিয়ে চোখ হারানো বেল্লাল পাচ্ছেন না উন্নত চিকিৎসা। এক চোখ হারিয়ে অপর চোখটিও এখন হারানোর পথে। তাই অর্থ নয়, সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন- বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার।
শুধু বেল্লাল নয়, ঝালকাঠিতে জুলাই আন্দোলনে আহত এবং নিহত সবার পরিবারের খোঁজ-খবর রাখছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ভবিষ্যতেও তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
দেশ গড়ার রঙিন স্বপ্ন নিয়ে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়া বেল্লাল শরীরে বহন করছেন বিভীষিকাময় জুলাইয়ের নির্মম স্মৃতি। তার পরও সুন্দর পৃথিবী দেখার স্বপ্ন মুছে যায়নি বেল্লালের। তবে হবে কী তার সেই স্বপ্ন পূরণ? সেই প্রশ্নই এখন দৃষ্টিহীন বেল্লালের।