মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি,
মানিকগঞ্জে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ বাহাউদ্দীনের দুর্নীতির নিউজ করতে যাওয়ায় তার পেটুয়া প্রভাবশালীদের যোগসাজশে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় সাংবাদিক সমাজ ও সুশীল সমাজে ক্ষোভ তৈরী হয়েছে।
গতকাল ১১ নভেম্বর ২০২৫ মানিকগঞ্জে পাঁচজন স্থানীয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ বাহাউদ্দীনের রুমে টাকা চুরির মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলখানায় পাঠানোর ঘটনা মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত ষড়যন্ত্র বরে দাবি ভুক্তভোগীদের।
জানাযায় জেলা সদরের একটি সরকারি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও প্রভাবশালী একটি মহল পরিকল্পিতভাবে তাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
সূত্রে জানা যায়, মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলা নং-১৯, তারিখ ১১ নভেম্বর ২০২৫, ধারা ৩৮০/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ অনুসারে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় আসামি করা হয়েছে জেলার পরিচিত পাঁচজন সাংবাদিককে।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, ১০ নভেম্বর দুপুরে উক্ত সাংবাদিকরা “সাংবাদিক পরিচয়ে” মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ডা. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিনের, তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে প্রবেশ করেন এবং বিদায়ের সময় নগদ টাকা ও মালামাল ভর্তি একটি ব্যাগ চুরি করে নিয়ে যান বলে অভিযোগ করেন।
তবে ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, হাস্যকর ও সাজানো নাটক বলে দাবি করেছেন। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ বাহাউদ্দীনের দুর্নীতির নিউজ করতে গেলে,তার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি সাংবাদিকদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ঠেকাতে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে এই মামলাটি সাজিয়েছে।
ন্যাশনাল গ্লোবাল টিভির সাংবাদিক নাহিদুর রহমান শামীম বলেন,আমরা হাসপাতালের অনিয়মের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছিলাম।পরদিনই আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মুলক মামলা দেওয়া হয়। এটি সম্পূর্ণ প্রতিহিংসামূলক ও সাজানো ষড়যন্ত্র।”
অন্যদিকে, সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ প্রেসক্লাব এবং সম্মিলিত মানবাধিকার জোট এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ প্রেসক্লাব কেন্দ্রীয় সভাপতি সাংবাদিক ফরিদ খাঁন বলেন,সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর জন্য এ ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করা হচ্ছে। আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত ও মুক্তি দাবি করছি।”
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন, অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
আমি কারও বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করিনি,পুলিশ তাদের তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে।”
তবে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী ও নাগরিক সমাজ মনে করছেন, এই মামলা সাংবাদিকতা দমন ও ভয়ের পরিবেশ তৈরির অংশ। তারা অবিলম্বে সাংবাদিকদের মুক্তি ও মামলার পুনঃতদন্ত দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আল আমিন মানিকগঞ্জ সদর থানার ও সি র মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বিভ্রান্তিকর ও ভুল তথ্য দিয়ে বিব্রতকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পরবর্তীতে সাংবাদিক আল আমিন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মহোদয়ের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন। এসময় এসপি গণমাধ্যমের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখিয়ে বলেন,
“যদি কেউ ব্যক্তি পর্যায়ে কোনো অপরাধে জড়িত হয়, সেটি তার ব্যক্তিগত বিষয় কিন্তু এজন্য কোনো সাংবাদিক সংগঠন বা পেশাগত মহলকে ছোট করা যাবে না,আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি।
স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ বলছে, এসপি’র এ অবস্থান গণমাধ্যমের প্রতি ইতিবাচক মনোভাবের প্রতিফলন। তারা অবিলম্বে ষড়যন্ত্রমূলক এই মামলার তদন্তে সাংবাদিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধি যুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন।