মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের জাগির ইউনিয়ন পরিষদের পাশে অবস্থিত বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট পাটের কৃষি পরীক্ষা কেন্দ্র । সাম্প্রতিক স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগে জানা যায়, সরকারি ১০,২৯৯ শতাংশ জায়গা জুড়ে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানটি । যেখানে পাট নিয়ে গবেষণা কেন্দ্র হলেও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিভিন্ন দুর্নীতি ও মদের আড্ডাখানা হিসেবে গড়ে তুলেছে এই প্রতিষ্ঠানকে । এখানে শুধু পাট নয় বিভিন্ন ধরনের সবজি, ধান, খেসারি, মুসুরি, মাসকালাই সহ মার্কেটে বিক্রির উপযোগী অনেক সবজি এখানে চাষ হয় । যার অধিকাংশ বিক্রি করে লভ্যাংশ দিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করছে প্রতিষ্ঠানের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১৯ অক্টোবর ২০২৫ ইং মানিকগঞ্জের বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ সালেহ্ মোহাম্মদ আশরাফুল হক প্রতিষ্ঠানে নেই । এসময় বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ আরিফুল ইসলাম কে প্রতিষ্ঠানের এমন চিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এবার ৩০০ শতাংশ মাসকলাই বপন করা হয়েছে । যার প্রতি শতাংশ ১০০/১৫০টাকা করে নিজস্ব কর্মচারীদের মধ্যে বিক্রি করা হয়েছে ।এ ছাড়াও অন্য কোন ফসল চাষ হলে তা আমরা বিক্রি করে খরচ রেখে লভ্যাংশ সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে থাকি ।"
তবে তারই অফিসে মদের বোতল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, "এখানে কোন অ্যালকোহল নেই, মূলত পানি রেখে আমরা তা পান করি" ।
সরকারি অফিসে মদের বোতলের বৈধতা আছে কিনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোন সদ উত্তর দিতে পারেননি ।
সরকারি কোষাগরের ট্রেজারি চালান ও সরকারি বাজেট সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করতে বলেন ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন, প্রতি শতাংশ কালাই ২০০ টাকা করে বিক্রি করা হয়েছে ১ টাকা কম নয়।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ সালেহ্ মোহাম্মদ আশরাফুল হক কে মদের বোতল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, "আরিফ ছেলেটি ইয়াং ও খুবই ভালো, শখের বশে এমনটি করেছে । আগামীকাল অফিসে গিয়ে মদের বোতলটি ফেলে আমি ওকে পানির বোতল কিনে দিবো ।"
বিভিন্ন প্রকার ফসল চাষ ও বিক্রি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, "এ প্রতিষ্ঠানে পাট ছাড়া অন্য কিছু বপন করার নিয়ম নেই তবে, মাটির উর্বরতার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকার শস্য বপন করি এবং তা মাটির সাথে মিশিয়ে দেই ।"
প্রতিষ্ঠানের আশেপাশের বাসিন্দারা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তারা বলেন, এরা বিভিন্ন মৌসুমে নানা ধরনের ফসল বপন করে তা নিজেদের মধ্যে সিন্ডিকেট করে বিক্রি করে । সব টাকা নিজেদের পকেটে ভরে । এ সকল অসৎ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া দরকার, যাতে কেউ সরকারি সম্পদ নিজস্বভাবে ভোগ করতে সাহস না পায় ।