বরিশাল প্রতিনিধি ।।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ তিন দফা দাবির টানা ৩৭ দিন ধরে আন্দোলনে আশা ছিলো ইউজিসি প্রতিনিধি এসে দাবির বিষয়ে কথা বলবে শিক্ষার্থীদের সাথে।
কিন্তু সারা মেলেনি ইউজিসি’র। তাই দাবি আদায়ে এবার আমরণ অনশনে বসেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ জন শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নিচতলায় অনশনে বসেন তারা। তাদের পাশে ঘুমিয়েই রাত কাটান উপাচার্য অধ্যাপক ড. তৌফিক আলম।
অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী শারমিলা জামান সেঁজুতি, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের অমিয় মন্ডল, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের তাজুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের মোঃ আবুবকর সিদ্দিক, দর্শন বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের পিয়াল হাসান, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের তামিম আহমেদ রিয়াজ এবং আইন বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শওকত ওসমান স্বাক্ষর।
অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ক্যাম্পাস সম্প্রসারণ ও শতভাগ পরিবহন সেবা নিশ্চিতের দাবিতে গত ২৮ জুলাই থেকে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছে শিক্ষার্থীরা। ইতোপূর্বে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান এবং সবশেষ কয়েক দফা মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে সড়ক অবরোধ থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।
অনশনে বসা শিক্ষার্থী আইন বিভাগের জোবায়ের ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শর্মিলা জামান সেজুতিসহ শিক্ষার্থীরা বলেন, টানা ৩৭ দিনের আন্দোলন সরকার, ইউজিসি কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চোখে পড়েনি। শিক্ষার্থীদের মৃত্যু হলে হয় তো তাদের ঘুম ভাঙবে। তাই আমরণ অনশনে বসেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবে। তাতে কোনো অঘটন ঘটলে দায়ভার সরকার, শিক্ষামন্ত্রণালয় এবং ইউজিসিকেই নিতে হবে।
এদিকে রাত দেড়টার দিকে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে অবস্থান নেন অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. তৌফিক আলম। দাবির বিষয়ে তিনি আশ্বস্ত করেন শিক্ষার্থীদের। তাতে সায় দেয়নি শিক্ষার্থীরা। তাই গ্রাউন্ড ফ্লরে শিক্ষাূথীদের সাথে শুয়েই রাত কাটালেন উপাচার্য তৌফিক আলম।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলেছে, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে অবগত সরকার। ভূমি অধিগ্রহণসহ তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে কাজ করছে মন্ত্রণালয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধান আসবে বলে জানিয়েছেন, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর রাহাত হোসেন ফয়সাল।
৩৭ দিনের আন্দোলনে মন গলেনি শিক্ষা প্রশাসনের, শিক্ষার্থীদের অনশনের ডাক পৌঁছাবে কি সরকারের কানে,সেই প্রশ্ন থেকেই যায় সংশ্লিষ্টদের মনে।